Ad-din Akij Medical College, Khulna

As trading groceries was very popular and profitable in Calcutta, Akij opened a shop named Nilamwala Chhay Ana where every item kept for sale was six ana only. Shopkeepers sold their goods through reciting Hindi rhymes but as he did not know Hindi properly, he hired an assistant for reciting Hindi rhymes. One day, police arrested him, the court sentenced him 3 days jail and penalised Rs five. On being free from jail, he sold all of his so-called business goods. Meantime Akij was introduced to a Peshawari businessman and with him he went to Peshawar where he stayed about two years. He returned to Calcutta with a modest capital to start any small business.
From this business he made a small fortune of about ten thousand Rupee and returned home to meet his parents, but they did not survive long to see their great son to become great in the society. Akijuddin married Sakhina Khatun at the age of 19, a good time to get married in those days.
Akij met Bidhu Bhushan, friend of his father, who was then famous for his patent Bidhu Bidi. With his help, Akij started his BIDI (cigarette) production in the year 1952. Alongside, he also established a grocery shop near Bezerdanga rail station. He made profit from both. He branded his bidi as Aakij Bidi. From 1954, he printed label for his bidi. His brand got popularity rapidly. The bidi business flourished unabated. By 1960-62, the manpower of his bidi factory rose to 250 workers. Akijuddin expanded his enterprise to more areas, such as rice, jute, paddy etc. By 1972, Akij made a substantial capital for greater investment. He' formed an industrial group called Akij Group, as of now. Akij Group made profits and expanded its activities still further and turned one of the leading entrepreneurial leaders in the country. Under the umbrella of the Akij Group, the following industrial units are there by 1998: Akij Biri Factory Limited (1950), SAF Industries Limited (1960), Dhaka Tobacco Industries Limited (1966), Akij Printing and Packaging Limited (1974), Akij Transport Agencies Limited (1980), Navaron Printing and Packaging Limited (1980), Jess Pharmaceutical Limited (1986), Akij Match Factory Limited (1992), Akij Jute Mills Limited (1994), Akij Cement Company Limited (1995), Akij Textiles Mills Limited (1995), Akij' Particle Board Limited (1996), Akij Housing Limited (1997), Savar Industries Limited (1998), Akij Foods and Beverage Limited (2000), Akij Online Limited (2000), Nebula Ink Limited (2000), Akij Corporation Limited (2001), Akij Computer Limited (2001), Akij Institute of Technology Limited (2001), Afil Agro Limited (2004), and Afil Paper Mills Limited (2005). About thirty two thousand people work in the Akij business empire.
Akij Group is actively involved in various socio-cultural activities. The Group has been operating a sizeable orphanage free of charge in district town. The Group has also acquired a modern mother and children hospital previously owned by Save the Children (UK). The hospital is being operated as a not-for-profit concern by AD-DIN WELFARE CENTRE and Ad-Din Foundation, which Akijuddin founded with the inspiration and collaboration of another social activist Professor MOHAMMAD SHARIF HUSAIN. The great entrepreneur and philanthropist died on 10 October 2006 at the age of 77.
শেখ আকিজ উদ্দিন ১৯২৯ সালে খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার মধ্যডাঙ্গা গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতা এই গ্রামেরই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শেখ মফিজ উদ্দিন ও মাতা মতিনা বেগম। এক মাত্র সন্তান আকিজকে নিয়ে তার পিতার ছোট্ট সংসার। কৃষি প্রধান বর্ধিষ্ণু গ্রাম। তবুও মফিজ উদ্দিনের আস্থা ছিল স্বাধীন ব্যবসায়। তাই তিনি ধান, চাল, নারকেল, এবং নিত্য ব্যবহার্য নানান জিনিসের ছোটখাটো ব্যবসা করতেন। বাবার এই ব্যবসায়ী চেতনার পুরোটাই আয়ত্ব করেছিলেন বালক আকিজ উদ্দিন। চার পাশের মানুষের তীব্র দারিদ্র ও অসচ্ছলতার চিত্র বাল্যকালেই তাকে চরমভাবে আহত করেছিল। তাই একদিন সকালে বাবার কাছে থেকে মাত্র ১৬ টাকা নিয়ে বেরিয়ে পরে আকিজ। সময়টা ১৯৪২ সাল। সেই সময় ১৬ টাকার অর্থমূল্য নেহাৎ কম ছিল না। নানা দিক বিবেচনা করে কাছাকাছি কলকাতা শহরেই পাড়ি জমান আকিজ। শুরু হলো জীবনের একক সংগ্রাম।
আত্মীয় পরিজন বিশাল শহরে আকিজের একমাত্র আশ্রয়স্থল হলো শিয়ালদহ রেলস্টেশন। সেখানেই অনিশ্চিত দিনের শুরু ও রাতের ক্লান্তি যাপন। কী করে একটি সুবিধা জনক ব্যবসা শুরু করা যায়। এই ছিল তার সারাক্ষণেরে ভাবনা। সারাদিনের একমাত্র খাদ্য ৬ পয়সার ছাতু। এর বেশি খরচের ঝুকি নেবার সাহস তার ছিলো না। একদিন স্থানীয় জাকারিয়া হোটেলের মালিকের চোখে পড়েন বালক আকিজ। ভদ্রলোকের সদয় বিবেচনায় সেই হোটেলের এক পাশে আশ্রয় জোটে তার। এর মাঝে একটি ব্যবসা শুরু করে সে। পাইকারী দরে কমলা লেবু কিনে হাওড়া ব্রীজে ফেরী করার ব্যবসা। এর জন্য পুলিশকে দুই টাকা করে ঘুষও দিতে হয় তাকে। সারাদিনে কমলা লেবু বিক্রি করে ক্লান্ত হয়ে শিয়ালদহ স্টেশনে বালিশ ছাড়া খবরের কাগজ বিছিয়ে ঘুমাতের তিনি।
সেই সময় কলকাতার আর একটি লাভজনক ব্যবসার সন্ধান পান আকিজ। রাস্তার পাশে ভ্যান গাড়িতে মুদি দোকান। দোকানের নাম নিলাম ওয়ালা ছ’আনা। নামেই বোঝা যায় দোকনের প্রতিটি জিনিসের দর ছিলো ছ’আনা। কিন্তু সমস্যা হল, অন্য সব দোকানদাররাই ছোট ছোট মজার হিন্দি ছড়া কেটে তাদের জিনিস বিক্রি করত। এদিকে আকিজ একদম হিন্দি ভাষা জানতো না। শেষে এক বন্ধুর সহায়তায় অল্প ক’দিনেই সে হিন্দি ভাষা রপ্ত করে ফেলল ব্যবসার খাতিরে। সব মিলিয়ে মোটামুটি ভালোই চলছিলো ব্যবসা। কিন্তু হঠাৎ ঘটে গেলো একটি বিপদ। আকিজকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল। সেখানের তিন দিনের জেল ও পাঁচ টাকা জরিমানা হল তার। একটানা জীবনযুদ্ধে একটি বড় ছন্দপতন হল যেন। ক্ষুদ্ধ আকিজ জেল থেকে বের হয়েই তা পুরো দোকানটি বিক্রি করে দেন।
সাময়িক হতাশা আকিজের যেন আরো উদ্দীপ্ত করলো নতুন কিছুর সন্ধানে। কলকাতাতেই একদিন পরিচয় হল এক পেশোয়ারী ব্যবসায়ীর সাথে। তার হাত ধরে আকিজ পাড়ি জমালো পেশোয়ারে। জমানো টাকা দিয়ে নতুর করে শুরু করলো ফলের ব্যবসা। সেই সাথে শিখে নিলো পশতু ভাষা। এভাবে কেটে গেলো দুই বছর। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তিকাল। অবশেষে দশ হাজার টাকার মুনাফা নিয়ে আকিজ ফিরে এলো প্রিয়তম বাবা-মার সান্নিধ্যে, নিজের বাড়িতে। কিন্ত কিছুদিনের মধ্যেই বাবা-মার মৃত্যুতে নিঃসঙ্গ হয়ে পরে আকিজ। তখন তার বয়স মাত্র উনিশ বছর। সেই বয়সে তিনি বিয়ে করলেন সখিনা খাতুনকে।
১৯৫২ সালে আকিজ প্রথম বিড়ির ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসাটির ধারণা তিনি পেয়েছিলেন নিতাই চন্দ্র দাস নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে। সেই সময়ের বিখ্যাত ‘বিধু’ বিড়ির মালিক বিধু ভুষন তারই এক বন্ধুর বাবা। তার অনুপ্রেরণাতেই আকিজ প্রচন্ড পরিশ্রম করে বিড়ির ব্যবসাটিকে দাড় করানোর চেষ্টা শুরু করেন। ধীরে ধীরে বেজেরডাঙ্গা তার নিজ এলকায় রেলস্টেশনের পাশে একটি মুদি দোকান প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৫৪-৫৫ সালের দিকে এই দোকানে তার মোট বিনিয়োগের পরিমান দাঁড়ায় প্রায় ষাট হাজার টাকা। এর মধ্যেই ঘটেই যায় আরেক দূর্ঘটনা। এক রাতে আকিজের পুরো দোকানটি পুরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। অসীম ধৈর্যশীল আকিজ এতটুকু ভেঙ্গে পড়েননি তাতে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আচিরেই তিনি গড়ে তোলেন নতুন দোকান। এ সময় তাকে সহায়তা করেন ফুলতলা বাজরের কালাকুন্ডু। তার সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও নিরলস পরিশ্রমের ফল কিছু দিনের মধ্যেই মোট মূলধনের পরিমান দাড়ায় প্রায় লাখ টাকা। এরই পাশাপাশি আকিজ শুরু করে ধান, পাট, চাল, ডাল, গুড় প্রভৃতির খুচরা ব্যবসা। সমস্ত ক্ষেত্রেই আকিজের প্রধান মুলধন ছিলো বিশ্বস্থতা । ব্যবসায়ী মহলের সবাই তাকে এক বাক্যে বিশ্বাস করতো।
পরবর্তীকালে ষাটের দশকের দিকে ব্যবসায়িক কারণে চলে আসেন যশোরের সীমান্তবর্তী থানার নাভারণ পুরাতরন বাজারে। এখান থেকে বিড়ির ব্যবসায় ব্যাপক প্রসার ঘটান এবং ১৯৫০ সালে গড়ে তেলেন দেশের সর্ববৃহৎ আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী। নাভারনে আসার প্রথম দিকে ব্যবসা প্রসারে তাকে সহযোগিতা করেন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোজাহার বিশ্বাস।
এভাবেই ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেন আকিজ। নতুন নতুন উদ্ভাবনী মেধায় তিনি উন্মোচন করেন ব্যবসার নানা দিগন্ত। একে এক গড়ে তোলেন আকিজ তামাক ফ্যাক্টরী, আকিজ নেভিগেশন, আকিজ জুট মিল (১৯৯২) আকিজ ম্যাচ ফ্যাক্টরী (১৯৮৬), আকিজ সিমেন্ট ফ্যাক্টরী (১৯৯৪), এস এ এফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ (১৯৬০) , ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ (১৯৬৬), আকিজ প্রিুন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ (১৯৭৪), নাভারণ প্রুন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ (১৯৮০), জেস ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ (১৯৮০), আকিজ ট্রেক্সটাইল মিলস লিঃ (১৯৯৫), আকিজ হাউজিং লিঃ (১৯৯৭), সাভার ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ (১৯৯৮), আকিজ ফুডস এন্ড বেভারেজ লিঃ (২০০০), আকিজ অন লাইন লিঃ, (২০০০), নেবুলা ইঙ্ক লিঃ, (২০০০), আকিজ কর্পোরেশন লিঃ, (২০০১), আকিজ কম্পিউটার লিঃ (২০০১), আকিজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজী লিঃ (২০০১), আফিল এ্যাগ্রো লিঃ (২০০৪), আফিল পেপার মিলস লিঃ (২০০৫) ইত্যাদী শিল্প প্রতিষ্ঠান। এখন প্রায় চল্লিশ হাজার কর্মী তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মে নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে এবং বাংলাদেশের সরকারকে প্রতি বছর প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয়কর পরিশোধ করেন। এসবের পিছনে ছিল তার সকাল থেকে রাত অবধি অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধা।
শেখ আকিজ উদ্দিন জীবনের সকল শ্রম সাধনা কেবল মাত্র নিজেকে প্রতিষ্ঠার কাজে ব্যায় করনেনি। শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি তিনি একজন সফল সমাজ সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছোট বেলায় দরিদ্র, অসহায় ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের করুন অবস্থা উপলদ্ধি করেই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শরিফ হোসেনের সহায়তায় ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আদ্-দ্বীন। বর্তমানে এই সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠান ‘ঢাকা মগবাজারে আদ্-দ্বীন উইমেন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ফাতেমা নার্সিং ইনিস্টিটিউট ও বিএসসি নার্সিং ইনিস্টিটিউট, বসুন্ধরায় আদ্-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনায় আদ্-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, যশোরে আদ্-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপতাল, আদ্-দ্বীন নার্সিং ইনিস্টিটিউট, আদ্-দ্বীন চক্ষু হাসপাতাল ও আদ্-দ্বীন চিলড্রেন হাসপাতাল, কুষ্টিয়ায় আদ্-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপতাল ও সাফিনা নার্সিং ইনস্টিটিউট। বর্তমানে সারাদেশে এই প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করেছে। তার অর্থায়নে পরিচালিত আকিজ কলেজিয়েট স্কুল, প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই যশোর শিক্ষা বোর্ডের সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম বহন করে আসছে। এছাড়াও একটি এতিম খানা, একটি বালিকা বিদ্যালয় ও ফোরকানিয়া প্রকল্প ও একাধিক মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এমন একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়া সত্বেও তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা ছিলনা। অক্লান্ত পরিশ্রম, কঠোর অধ্যাবসায়, আপোষহীন সততা, সর্বপরি মহান আল্লাহর উপর পরিপূর্ন আস্থা তাকে সফলতার চুড়ান্ত শিখরে পৌছে দিয়েছে। মেধা ও প্রতিভার সমন্বয়ে গড়ে তোলা তার প্রতিষ্ঠানে এখন হাজার হাজার শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অর্থ, সম্পদ ও মানব সেবার এ বিরল ব্যকিত্ব ১০ অক্টোবর ২০০৬ সালে সিংগাপুরে মাইন্ট ইলজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৭বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তার মৃততে অর্থনীতি সেবার ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনই পুরণ হবার নয়।