
সাধনার স্বপ্ন পূরণে খুলনার আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ – মানবজমিন নিউজ
মানবজমিন নিউজ লিংকঃ http://mzamin.com/article.php?addin
দরিদ্রতা দমিয়ে রাখতে পারেনি সাধনা বিশ্বাসকে। তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সাধনা আজ ডাক্তারি পড়তে পেরে দারুণ খুশি। তার এই স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে খুলনার আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। সাধনা বলেন, ২০১৫ সালে বাবার অকাল মৃত্যুর পর মা হাল ধরেন সংসারের। একমাত্র সন্তান আমি। গ্রামে গৃহকর্মীর কাজ তেমন একটা না থাকায় মাঠে পরের জমিতে কাজ করে কোনো রকম সংসার চালান মা। দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করে সেই টাকা দিয়ে তাদের সংসার চলে। মা অনেক কষ্ট করে আমার লেখাপড়ার খরচ যোগাড় করেন। মায়ের অনেক কষ্টের ফসল আজ আমি মেডিকেলের ছাত্রী। মায়ের সাহায্য ছাড়া আমার এই পর্যন্ত আসা কোনো ক্রমেই সম্ভব হতো না। আবেগাপ্লুত সাধনা আরো জানান, চলতি বছরের এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। মেধা তালিকায় একটু পেছনে থাকার কারণে সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগ না পাওয়ায় মনটা খারাপ হয়ে যায়। অর্থের অভাবে তার স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যাচ্ছিল। সেই মুহূর্তে স্বপ্ন পূরণে পাশে এসে দাঁড়ায় আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজ। যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাকুরি গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে সাধনার ভাইবোন নেই। বাবা লক্ষণ বিশ্বাস অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার পর থেকে মা উল্লাসী বিশ্বাস পরের জমিতে কাজ করে মেয়ের পড়ালেখার খরচ যুগিয়ে আসছেন। নড়াইলের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে ও যশোরের বাঘারপাড়ার ভাঙ্গড়া আদর্শ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পান অদম্য মেধাবী সাধনা। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ২৬৪ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় তার অবস্থান ছিল ৬৪৫৪। সাধনা বলেন, সব সাফল্য যখন মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছিল, তখন আদ-দ্বীন আমাকে মেধাবী ও দরিদ্র কোটায় পড়ার সুযোগ করে দেয়। আমি তাদের কি বলে কৃতজ্ঞতা জানাবো, সে ভাষা আমার জানা নেই। সরকারি মেডিকেলে সুযোগ না পেয়ে ভেবেছিলাম, আমার মায়ের পক্ষে তো বেসরকারি মেডিকেলে পড়ার খরচ চালানো সম্ভব হবে না। আমার স্বপ্ন বুঝি আর পূরণ হলো না। আদ-দ্বীন কলেজ আমার ও মায়ের স্বপ্ন পূরণ করছে। এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, আমি চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। যেন কেউ আমার বাবার মতো বিনা চিকিৎসায় মারা না যান। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল, ডাক্তার হবো। জীবনযুদ্ধে হার না মানা সাধনার মা উল্লাসী বিশ্বাস বলেন, কষ্ট করে মেয়েকে মানুষ করেছি। তার একটা সুযোগ-সুবিধা হয়েছে, ভালো লাগছে। উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার সময় সাধনার বাবা মারা যান। ওর মাত্র তিনটি পরীক্ষা হয়েছিল তখন। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তার পরও সে শোক সামলে মেয়েটি ভালো ফলাফল করে। কিন্তু অর্থের অভাবে মেয়ের ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হচ্ছিল না। তাকে সে সুযোগ দিয়েছে আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ। যারা আমার মেয়েকে ডাক্তার হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে, তাদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। এ প্রসঙ্গে খুলনার আদ-দ্বীন আকিজ মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. আশফাকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, প্রতিটি মেডিকেল কলেজে দরিদ্র ও মেধাবীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রয়েছে। আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ সেটা সততার সঙ্গে পূরণ করার চেষ্টা করে। প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে তদন্তসাপেক্ষে এই সুযোগ দেয়া হয়। দরিদ্র ও মেধাবীদের কাছ থেকে শুধু সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে যে ফি (নিকটতম সরকারি মেডিকেল কলেজ) নির্ধারণ থাকে সেটা নেয়া হয়। কোনো মাসিক বেতন দিতে হবে না এদের। দেশে সরকারি মেডিকেল কলেজের আসনসংখ্যা সীমিত। এ কারণে অনেকেরই ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় না। সে স্বপ্ন পূরণ করছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো। কিন্তু বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার খরচ বেশি হওয়ায় অনেকের পক্ষে তা বহন করা সম্ভব নয়। আদ-দ্বীন অনেক কম খরচে শিক্ষার্থীদের চিকি?ৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে। যাদের পক্ষে সে খরচ দেওয়াও সম্ভব নয়, তেমন দরিদ্র মেধাবীদের বিনামূল্যে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। তাদের মধ্যে একজন সাধনা বিশ্বাস। সাধনার মতো অনেকের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে আকিজ আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ।
আমার মেয়েকে MBBS পড়াতে চাই। এখন কি কোথাও ভর্তি করা যাবে কি?
Replyআমার মেয়েকেই ভর্তি করাতে চাই। এখন কো সুযোগ আছে কি
Replyআমার মেয়েকেই ভর্তি করাতে চাই।
01744477335
Replyআমার মেয়েকেই ভর্তি করাতে চাই। এখন কি করা যাবে
Reply